পাখির কলতানে মুখর নীলসাগর দিঘী
আরডিজেএ ডেস্ক

শীত এলেই প্রকৃতি সেজে ওঠে নতুন সাজে। পরিযায়ী পাখির আগমনে নতুনভাবে সেজেছে নীলফামারীর নীলসাগর। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে আসার পাখির কিচিমিচির ও কলতানে মুখর নীলসাগর। এসব পাখি দেখতে আসছেন দশর্নার্থীরা।
নীলফামারী জেলা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে গোড়গ্রাম ইউনিয়নের ধোপাডাঙ্গা গ্রামে ৫৩.৬০ একর জমির ওপর নীলসাগর দিঘির অবস্থান। আদি নাম বিন্না দিঘি। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে জলাশয়টি খননকাজ শুরু হয়েছিল।
হিন্দু শাস্ত্রমতে খ্রিস্টপূর্ব নবম হতে অস্টম শতাব্দী পর্যন্ত পান্ডবরা গৌরবদের চক্রান্তের শিকার হয়ে ১২ বছরের বনবাসে যেতে বাধ্য হয়। অনেকেই মনে করেন, সেসময় নির্বাসিত পান্ডবদের পিপাসা মিঠাতে বৈদিক রাজা বিরাট এ দিঘিটি খনন করেছিলেন। বিরাট দিঘি কালক্রমে এই দিঘির নামকরণ করা হয় রাজার মেয়ের নামে বিন্না দিঘি। ১৯৯৮ সালে নীলফামারী জেলার নাম অনুসারে নামকরণ করা হয় নীলসাগর।
শীতের শুরুতেই ঝাঁকে ঝাঁকে আসছে অতিথি পাখির দল। তাদের কলতানে পুরো এলাকা যেন পাখির স্বর্গরাজ্য। পাখি রক্ষায় জেলা প্রশাসন কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছে। দেবদারু লতা গুল্ম দিয়ে ঘেরা অপরুপ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিন ভিড় করছে পাখিপ্রেমী পর্যটকরা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রতিবছর শীতের শুরুতে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে বাহারি রঙের এসব পাখি আসে। হিমশীতল আবহাওয়া থেকে রক্ষা পেতে তারা চলে আসে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতির সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে এসব পরিযায়ী পাখি।
নীলসাগরে কর্মরত আতাউর রহমান জানান, এখানে যে অতিথি পাখি আসছে তার নাম ছোট সরালি। শীতের শুরু থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বহু দর্শনার্থী আসছেন এসব অতিথি পাখি দেখার জন্য। পাশাপাশি অনেক পাখি শিকারিও আসে। তাদের নিরুৎসাহিৎ করা হয়। কারণ এই পাখিরা এদেশের অতিথি।
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, শীতের শুরু থেকে নীলসাগরে অতিথি পাখিরা এসে ভিড় করে। পাখিদের যাতে কেউ শিকার করতে না পারে এজন্য প্রশাসনের পক্ষে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, নীলসাগর ছাড়াও তিস্তা ব্যারাজ, ভিমের মায়ের চুলা, হরিশ্চন্দ্র রাজার বাড়ি, চিনি মসজিদ, কুন্দুরাজার মাজার, তিস্তা ক্যানেল, ধর্মপালের গড়, নিল কুঠির ও পাল রাজার বাড়ী রয়েছে।
সূত্র: সংগৃহীত